কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলার সর্ব প্রথম প্রবেশ পথ চকরিয়া উপজেলা কাকরা ইউনিয়নের নলবিলার শাপলা চত্বর লাল শাপলার বিলে মুগ্ধ করে প্রকৃতি প্রেমিদের। নলবিলার শাপলা চত্বরের চারিদিকে সবুজ অরণ্যে লতা-পাতায় ঘেরা বিলজুড়ে লাল শাপলার বর্ণাঢ্য উৎসব। এ যেন এক প্রকৃতির অপরূপ লিলাভূমি সৌন্দর্য মনো মূগ্ধকর নয়না ভিরাম দৃশ্য।
এ যেন প্রকৃতিক সৌন্দের্যের লীলাভূমি এক লাল শাপলার স্বর্গ রাজ্য। লতা-পাতা গুল্মে ভরা পাহাড় ঘেরা বিলের পানিতে শত সহস্র লাল শাপলা হার মানিয়েছে সূর্যের আভাকেও। প্রকৃতির বুকে আঁকা এ যেন এক লাল সাদা কোন এক শিল্পীর হাতে আকা নিপুণ তুলির ছোঁয়া নকশি কাঁথা। বিলের হাজারো ফুটান্ত লাল শাপলাগুলো চোখ জুড়ায় দর্শনার্থী, পর্যটক ও পথচারিদের। বিলের যত ভিতরে যাওয়া যায় ততই বাড়তে থাতে লালের আধিক্য।
গাঢ় সবুজের বুকে এ যেন এক লাল স্বর্গ। এ জায়গাটি চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার নলবিলা শাপলা চত্বর কক্সবাজার জেলার প্রবেশ দ্বার সুজলা সুফলা পাহাড় সাগর বিল ঝিলের সমন্বয়ে গঠিত চকরিয়া উপজেলার নলবিলা শাপলা চত্বর। এ বিল লাল শাপলার বিল বা শাপলা চত্বর নামেই কক্সবাজার জেলা বাসির কাছে পরিচিত। প্রতিদিন এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। এসে
আনন্দ-উল্লাস আর আবেগ ঘন মনের খোরাক ও প্রানের মিলন মেলায় পরিনিত হয়েছে লাল শাপলার বিল। তাইতো শহরের কোলাহল ছেড়ে বিনোদন প্রিয় মানুষ গুলো ভিড় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রকৃতির ছোয়া পেতে লাল শাপলার নলবিলার শাপলা চত্বরে। প্রতিদিনই প্রকৃতি প্রেমী দর্শণার্থীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে লাল শাপলার বিল নলবিলা শাপলা চত্বর।
বিলের ফুটন্ত লাল শাপলা নলবিলাকে শাপলা চত্বর কে করেছে পরিপাটি। উপজেলার সাধাসিধে লোকজনের অতিথিপরায়ণতাও আপনাকে মানসিকভাবে করে তুলবে প্রাণবন্ত। শুধু উপজেলার নলবিলা শাপলা চত্বরে নয় লাল শাপলার অপরূপ দৃশ্য দেখা যায় চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে কিংবা কিছুক্ষনের জন্য ঘুরে বেড়াতে ভিড় জমায় প্রতিদিন সকালে বিকেলে ।
কিভাবে আসবেনঃ চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে চকরিয়া পৌর এলাকায় প্রবেশের আগেই অবস্থিতি নলবিলা শাপলা চত্বরের রাস্তার পূর্ব পাশে নেমে খুব সহজে আসতে পারবেন।
কখন আসবেনঃ সাধারনত বিলে জুন মাস থেকে শাপলা ফোটা শুরু করে। তবে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবর শেষ পর্যন্ত লাল শাপলা ভরপুর থাকে এ বিলে। লাল শাপলার প্রকৃত সৌন্দর্য ও ফুটন্ত অবস্থায় ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে আপনাকে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে উপভোগ করতে হবে। নৌকা ভ্রমণ করতে হলে খুব সকালে ঘুম উঠে সূজা নলবিলা শাপলা চত্বরে হাজির হতে হবে অথবা বিকেলে নৌকা ভ্রমণ করে দেখা যাবে নলবিলা শাপলা চত্বরের লাল শাপলার বিল।
কেননা সূর্যের উপস্থিতির সাথে সাথে শাপলা তার নিজের সৌন্দর্য গুটিয়ে নিতে শুরু করে। তাই সম্পূর্ন ফুটন্ত শাপলা দেখতে হলে বিলের আশপাশে রাতযাপন করে খুব ভোরে বিলে যেতে হবে। কারন খুব ভোরে শাপলার বিলে মিলবে নিটল বাংলার মনো মুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য। লাল শাপলার বিলে লাল-সবুজের মিলন দেখে মনে হবে এই বিলের পরতে পরতে হাজার হাজার বাংলাদেশের পতাকা ছড়িয়ে আছে। এমন দৃশ্য দেখে চোখ জুরিয়ে যাবে যে কোন বাঙ্গালীর।
সকালের সূর্যের সোনালী রোদ আর শেষ বিকালের গোধূলিলগ্নের আভা লাল শাপলার বিলে এক নতুন মাত্রা যোগ করে দেয়। খুব সকালে গেলে ফুটন্ত শাপলা দেখা যায়। রোদের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে শাপলা তার পাপড়ি গুটিয়ে নেয়। সন্ধ্যার পরে আবার ফুলগুলো ফুটতে শুরু করে।
কোথায় থাকরেনঃ এখানে থাকার জন্য ভালো ব্যাবস্থা আছে চকরিয়ায় অসংখ্য হোটেল রয়েছে রাতযাপনের জন্য। এখন থেকে সকালে শাপলার বিলের ভ্রমন আপনার জন্য সহজ হবে।
কিভাবে ঘুরবেনঃনলবিলা শাপলা চত্বরে ঘোরার জন্য অবশ্যই নৌকার প্রয়োজন হবে। ওই এলাকায় সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নৌকা পাওয়া যায়। নলবিলা শাপলা চত্বরে ঘুরতে ঘুরতে দেখা মিলতে পারে ছোট বড় সাপের। ভয়ের কারন নেই, এগুলো আপনার কোন ক্ষতি করবেনা। তবে সাবধানে দুরত্ব বজায় রাখাই শ্রেয়।
আর ঘুরতে বেরানোর সময় অবশ্যই সঙ্গে ক্যামেরা নিতে ভুলবেন না। কারন এই মনো মুগ্ধকর পরিবেশ দ্বিতীয়বার স্মরণ করতে চাইলে ক্যামেরায় তোলা ছবিই আপনাকে আনন্দিত করবে।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় সাধারনত পাঁচ প্রকার শাপলা দেখা যায়। লাল, সাদা, বেগুনি, হলুদ ও নীল রঙ্গের। এর এর মধ্যে সাদাটাই কেবল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই উদ্ভিদটি প্রায় ৩০০ খিস্টপূর্ব থেকে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আবদ্ধ অগভির জলাশয় খাল বিলে জন্মে থাকে। তবে অবহেলা-অযত্নে আর কৃষি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কিটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যাবহারে জাতীয় ফুল শাপলা হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও সরকারি ভাবে অনুকুল পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্ঠা চালানো প্রয়োজন।
সরকারীভাবে পর্যাটন কেন্দ্র ঘোষনার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি।‘ নলবিলা শাপলা চত্বরের লাল শাপলার বিল এক অপরূপ সুন্দর এলাকা। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বিশাল এলাকা নিয়ে লাল শাপলা জন্মেছে। প্রকৃতি প্রেমিরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই ছুটে আসছেন লাল শাপলার বিল দেখার জন্য। চকরিয়ায়র নলবিলা শাপলা চত্বর কে পর্যাটন কেন্দ্র করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সুদৃষ্টি কামনা করছি।